নিজস্ব সংবাদদাতা : এখনও পুরোপুরি করোনা অতিমারি থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার আগেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসকেরা। এবার সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। শুধু কলকাতা নয়, সামগ্রিকভাবে রাজ্যজুড়েই এবার ভাঙতে চলেছে ডেঙ্গির যাবতীয় পুরনো রেকর্ড—আরও স্পষ্ট করে বললে গত এক দশকের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে এবারের ডেঙ্গি। ইতিমধ্যেই তা ২৫ হাজার পার করেছে। গত সোমবার রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬৬২ জন। এবার কি ডেঙ্গির সঙ্গে ভোগাবে ম্যালেরিয়াও
কলকাতার কিছু ওয়ার্ডে ম্যালেরিয়া দেখা যাচ্ছে। পুজোর পর শুধুমাত্র ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে রোজ গড়ে ৩ জন করে ডেঙ্গি ও ৩ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এলাকায় পুরসভার হেলথ সেন্টারেই রোজ জ্বর নিয়ে আসছেন ৬০-৭০ জন রোগী। সেই চাপ সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের।
উত্তর কলকাতার বহু জায়গায় বসতি অনেকটাই ঘিঞ্জি। বহু এলাকায় পুরকর্মীরা ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগ করছেন। সেই কারণেই ড্রোন উড়িয়ে মশার বংশবৃদ্ধির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। পুজোর সময় ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযানে কিছুটা ঢিলেমি হয়েছে বলে জানালেন ১৩ নম্বর বরোর কাউন্সিলর ও ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্য রাউত। তবে ড্রোন উড়িয়ে বেশকিছু উঁচু বাড়ির ছাদে জল জমে থাকতে দেখেছেন পুরকর্মীরা।
ডেঙ্গির কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ম্যালেরিয়া যেভাবে বাড়ছে তাতে চিন্তিত পুরকর্মীরা। সবচেয়ে বেশি চিন্তায় ফেলেছে কোল ইন্ডিয়ার একটি জমি। ওই জায়গা পড়ে রয়েছে বহু ভাঙা গাড়ি, জলের ট্যাঙ্ক-সহ অনেক কিছুই। সেইসব জায়গায় জল জমে মশার বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্র তৈরি করে রেখেছে। এনিয়ে কোল ইন্ডিয়াকে ১১ বার নোটিস করা হয়েছে। আবার তাই আইনি পথে হাঁটার চিন্তাভাবনা করছে পুরসভা।
আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা, বৃষ্টির দাপটের জেরে এই সংখ্যা যে আরও বাড়বে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতালেই এই মুহূর্তে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন ৮০৬ জন। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কলকাতার যা আবহাওয়া, তাতে নভেম্বর মাস পর্যন্ত থাকবে ডেঙ্গির দাপট। ওই সময় পর্যন্ত যাবতীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে মানুষকেও সচেতন হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। একই সঙ্গে সচেতন হতে হবে পুজো কমিটি এবং ক্লাবগুলিকেও।
0 মন্তব্যসমূহ