আমাদের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একাধিক কারণ আছে, তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো
কিডনিতে পাথর জমা । কিডনিতে পাথর জমা হলে দেহের বর্জ্য নিষ্কাশন সুচারুরূপে হবে না।
বর্জ্য নিষ্কাশননে বাধা পাবে।
কিডনিতে পাথর কেন হয়:
কিডনির মধ্যে মিনারেল জমে ক্রিস্টাল তৈরি করে, একে কিডনির স্টোন বা পাথর বলা হয়। অর্থাৎ, ক্যালসিয়াম ও অক্সালেটের ডিপোজিশনের ফলে এই রোগের উৎপত্তি হয়। স্টোন যখন বড় আকার নেয় এবং সরু মূত্রনালীর মধ্যে দিয়ে যায় তখন মূত্রনালির ভেতরে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে এবং প্রস্রাবের গতি রোধ করে দেয় ।
আজকাল
কিডনিতে পাথর আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। কিডনিতে পাথর হলেই অপারেশনের করা লাগে না, যদি পাথরের সাইজ
ছোট আকারের হয়ে থাকে তাহলে ঘরোয়া উপায়ে সারানো সম্ভব । কিন্তু আকার বড়ো হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।
সেই জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাফি(USG) করে নিশ্চিত হতে হবে পাথরের সাইজ টা আসলে কি রকম । সেই মতো ব্যবস্থা নিতে হবে ।
[খবর আজকাল এ আরো ডায়াবিটিস এখন শিশুদের শরীরেও! কোন কোন লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হতে হবে? Diabetes in Kids.
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ
১। বমি বমি ভাব
২।মুখে অরুচি
৩।প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা লাগা
৪।প্রস্রাবে রক্ত আসা
৫।পিঠ ব্যথা,ব্যথার শুরুটা পিঠের উপরিভাগ থেকে,তারপর মূত্রাশয়ের কাছাকাছি চলে এলে ব্যথার অবস্থান নিচের দিকে নেমে আসবে।
৬। কিডনিতে পাথর হলে কখনো কখনো জ্বর আসতে পারে।
কিডনিতে পাথর হওয়া আটকাতে
কি করবেন?
১।জল :- কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রধান কারণ জল কম পান করা ।কিডনির কাজ হচ্ছে শরীরের বর্জ্য ছেঁকে শরীরকে টক্সিনমুক্ত রাখা। আর এই কাজটি কিডনি করে জলের সাহায্যে। জলের অভাবে লবণ, মিনারেলসহ ইউরিনের অন্যান্য উপাদান শুকিয়ে স্টোন সৃষ্টি করে । তাই আমাদের পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে ।
২।.লবণ:- কাঁচা লবণ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকারক । কারণ লবণের সোডিয়াম আমাদের কিডনিতে সহজেই জমে । একই সঙ্গে সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার ও আমাদের কিডনিতে পাথর জমাতে সাহায্য করে । কিডনিতে পাথর জমা এড়াতে চাইলে যে কোন ধরনের লবণ খাওয়া কমাতে হবে । দৈনিক ২,৩০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম খাবেন না ।
৩।প্রসাব চেপে রাখা:- প্রসাব চেপে রাখা যাবে না প্রসাব চেপে রাখলে প্রসাবের থলিতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে, ইউরিনের পথ( Uti) সংক্রমণ হতে পারে ।এবং পরে কিডনি কে সংক্রমিত করে ।
সেই জন্য বেগ এলেই প্রসাব ত্যাগ করা
উচিত ।
৪।ভিটামিন 'সি:- পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন 'সি' যুক্ত খাবার খেতে হবে । ভিটামিন 'সি' আমাদের ইউরিনারি ট্রাক(UTI) ইনফেকশন হতে দেয়না । এবং কিডনি কে সুস্থ রাখে। সেই সঙ্গে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে ।
৫।অতিরিক্ত ঔষধ ব্যবহার :- বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের
পরামর্শ ছাড়া কোনো রকম ঔষধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন । বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধ একেবারেই না খাওয়ার চেষ্টা করবেন
৬।প্রোটিন জাতীয় খাবার :- প্রাণীজ প্রোটিন খাওয়া সীমিত করতে হবে ।কারণ রেড মিট , ডিম ও সামুদ্রিক খাবারের মতো প্রাণীজ প্রোটিন বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ইউরিক অ্যাসিড হচ্ছে কিডনিতে পাথরের আরেকটি দায়ী উপাদান।
সব শেষে আপনার বয়স যদি ৪০ বছর পার হয়ে যাই, তাহলে কিডনি ভালো রাখতে বছরে অন্তত দু’বার ডায়বেটিস পরীক্ষা করুন , মাঝে মাঝে ব্লাড প্রেসারপরীক্ষা করুন । বছরে একবার ক্রিটিনাইন এবং
প্রস্রাবের মাইক্রো-এলবুমিন পরীক্ষা করুন ।
Related Articles :-
0 মন্তব্যসমূহ